২০০৯ সালের ঘটনায় একের পর এক নতুন তথ্য আসছে
রোনালদোকে সমঝোতা করতে বলেনি রিয়াল মাদ্রিদ
রোনালদোকে সমঝোতা করতে বলেনি রিয়াল মাদ্রিদ। ক্যাথরিন মায়োরগার দাবি, লাস ভেগাসের এক হোটেলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তাকে ধর্ষণ করেছিলেন। রোনালদো নিজে তা অস্বীকার করে এসেছেন শুরু থেকেই।
কিন্তু জার্মান পত্রিকা ডার স্পিগেল একের পর এক নথি প্রমাণ হিসেবে হাজির করছে। কদিন আগে মায়োরগার সঙ্গে রোনালদোর সমঝোতা চুক্তির ছবি প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা গেছে, রোনালদো একটা প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, মায়োরগা তাকে ‘না’ আর ‘থামো’ বলেছেন।
পর্তুগিজ পত্রিকা কোরেইয়ো ডা মানহার দাবি, রোনালদো এ সমঝোতা করতে চাননি। ২০১০ সালে তার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ তাকে বাধ্য করেছে এ চুক্তি করতে।
রোনালদো নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এ ধরনের কোনো কিছুতে নিজেকে যুক্ত করতে চাননি। কিন্তু স্প্যানিশ জায়ান্টরা নাকি রোনালদোকে বাধ্য করেছেন মায়োরগার সঙ্গে সমঝোতা করতে!
রোনালদো ও রিয়ালের আইনজীবীরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বেশ কয়েকবার একত্রিত হয়ে আলোচনা করেছে। স্বাভাবিকভাবেই এমন প্রতিবেদনে খেপেছে রিয়াল।
বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে টুইটার বা ফেসবুক নয়, সরাসরি ক্লাবের অফিশিয়াল সাইটে বিবৃতি দিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছ, ‘রিয়াল মাদ্রিদ ঘোষণা করছে, ক্লাব পর্তুগিজ পত্রিকা কোরেইয়ো ডা মানহার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
কারণ পত্রিকাটি ক্লাবের সম্মানে আঘাত হানার জন্য কিছু মিথ্যা খবর ছাপিয়েছে।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে জড়িয়ে পত্রিকাটি যে খবর ছাপিয়েছে, সে ব্যাপারে রিয়াল মাদ্রিদের কোনো ধারণাই নেই।
আর যে ব্যাপারে ক্লাবের কোনো ধারণা নেই, সে ব্যাপারে ক্লাব কোনো প্রভাবও রাখতে পারে না।
রিয়াল মাদ্রিদের দাবি
পত্রিকাটির কাছ থেকে পূর্ণ সংশোধনী দাবি করে রিয়াল মাদ্রিদ।’
সমঝোতা
এদিকে যে সমঝোতা নিয়ে এত আলোচনা, সেই নথির ভাষা বদলে গেছে বলে দাবি করেছেন রোনালদোর আইনজীবী পিটার ক্রিস্টিয়ানসেন।
তবে দুজনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি যে হয়েছে, সেটি অস্বীকার করেননি ক্রিস্টিয়ানসেন। বলেছেন, ‘রোনালদো সব অভিযোগ জোরালোভাবেই অস্বীকার করছেন।’
ক্রিস্টিয়ানসেন রোনালদোকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘২০০৯ সালে লাস ভেগাসে যা হয়েছিল, তা দুজনের সম্মতিতেই হয়েছে।’
সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী সব চেপে যাওয়ার বিনিময়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার পেয়েছেন মায়োরগা, সেটি মেনে নিয়েছেন রোনালদোর আইনজীবী, ‘এই সমঝোতা মানে কোনোভাবেই দোষ স্বীকার করা নয়।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অবমাননাকর অভিযোগটির শেষ টানতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শুধু তার উপদেষ্টাদের পরামর্শ মেনে চলেছিলেন।
যেন তার এত দিনের পরিশ্রম, অ্যাথলেটিক দক্ষতা আর আচরণগত সৌন্দর্যে গড়ে ওঠা সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা কেউ করতে না পারে।’
দুই দিন আগে ডার স্পিগেল দুই পক্ষের সমঝোতা চুক্তির যে নথি প্রকাশ করে, সেগুলো নিয়ে ক্রিস্টিয়ানসেনের বক্তব্য, ‘মি. রোনালদোর বিবৃতি আছে দাবি করে যেসব নথি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো মনগড়া।’
ফুটবল লিকসের সৌজন্যে প্রকাশিত এসব নথির দিকে ইঙ্গিত করে রোনালদোর আইনজীবী বলেন, ‘২০১৫ সালে ইউরোপজুড়ে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপরই (সাইবার) হামলা হয়েছে, তাদের ইলেকট্রনিক ডেটা চুরি হয়েছে।
হ্যাকার
এই হ্যাকার এসব তথ্য বিক্রি করতে চাইছে, আর একটি সংবাদমাধ্যম দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কিছু চুরি করা নথি প্রকাশ করছে।
যেটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বদলে ফেলা হয়েছে, নতুবা পুরোপুরিই মনগড়া।’
ডার স্পিগেল
ডার স্পিগেল অবশ্য কালই সেটির আবার জবাব দিয়ে লিখেছে,
‘আমাদের প্রতিবেদনের সমর্থনে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া শত শত নথি আছে আমাদের কাছে।
আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নড়ছি না।
ওই নথিগুলো প্রকৃত নয়, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।’
তথ্যসূত্র
টুইটার, ফেসবুক, কোরেইয়ো ডা মানহা, প্রথম আলো : ১২ অক্টোবর ২০১৮
-রঙিনদুনিয়া ডেস্ক