নারীর পবিত্রতা কি বিশেষ অঙ্গেই সীমাবদ্ধ?

admin

নারীর পবিত্রতা কি বিশেষ অঙ্গেই সীমাবদ্ধ?

অস্তিত্ব কখনও শরীরসর্বস্ব হতে পারে না। নারীর পবিত্রতা কি বিশেষ অঙ্গেই সীমাবদ্ধ?

কে পবিত্র, কে অপবিত্র- তার বিচার হতে পারে না বিশেষ অঙ্গ দিয়ে। কে কুমারী আর কে নন- তা দিয়ে নারীর সতীত্ব বিচার করার অধিকার নেই কারও।

শবরীমালা মন্দির নিয়ে পার্বতীর মতামত

কেরালার শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিয়ে যখন বিতর্ক জারি, সেইসময় এমন মন্তব্য করলেন মলয়ালম ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্বতী।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে বিতর্ক নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সমর্থন করে বলেন,

‘জন্ম থেকেই শুনে আসছেন ঋতুমতী নারী অপবিত্র। শুরু থেকেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিনি।

তাই কখনও কাউকে পরোয়া করেননি। যখনই মন চেয়েছে মন্দিরে গিয়েছেন।’ কেরালার কোঝিকোড়ে জন্ম পার্বতীর। সেই কেরালা যেখানে কিনা সাক্ষরতার হার দেশে সবচেয়ে বেশি (৯৩.৯৮%)।

শবরীমালা বিতর্ক

পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখ রাঙানি নেই। বরং অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে নারীদের। সবক্ষেত্রে পুরুষদের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারেন তারা।

তবে বাস্তব চিত্রটা নাকি একেবারেই আলাদা। শবরীমালা বিতর্কের জেরে সম্প্রতি যা সামনে এসেছে।

ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় নারীদের স্থান আসলে কোথায়-তা ফের স্পষ্ট হয়েছে।

তবে পার্বতীর দাবি, সংবাদপত্রে বা টেলিভিশনে যে হিসাব দেখানো হয়, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। দেশের অন্য রাজ্যগুলো থেকে একেবারেই ব্যতিক্রম নয় কেরালা।

পার্বতী বলেন, কাগজে অনেককিছুই বেরোয়। কিন্তু বাস্তবটা একেবারেই আলাদা। মানসিকতার পরিবর্তন একেবারেই হয়নি। আজও লিঙ্গের ভিত্তিতেই পরিচয় গড়ে ওঠে।

নারীরা নিজেও তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। নিজেদের মানুষ বলে ভাবতে শেখেননি এখনও।

১৭ বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রেখেছিলাম। লিঙ্গ বৈষম্যটা তখন আরও ভালোভাবে বুঝতে শিখি।

কথা বলার সময় পুরুষ সহকর্মীদের নজর আটকে থাকতো আমার শরীরে। বুঝিয়ে দিতো যে, তারা আর একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলছে না। কথা বলছেন একজন নারীর সঙ্গে। অনেকেই তাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

যেন ওটাই স্বাভাবিক। পুরুষদের মর্জির ওপরই যেন আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ!’- যোগ করেন পার্বতী।

শবরীমালা বিতর্কের জন্যও সেই সঙ্কীর্ণ মানসিকতাই দায়ী বলে মত পার্বতীর।

তিনি বলেন, শবরীমালা নিয়ে এতদিন কিছু বলিনি কারণ আমার কাছে এটা নতুন কিছু নয়।

জন্ম থেকে শুনে আসছি, ঋতুমতী মেয়েরা নাকি অপবিত্র। মেয়েদের অস্তিত্ব যেন শরীর সর্বস্ব। যাবতীয় পবিত্রতা লুকিয়ে যোনিতেই। কুমারী কি না, তার ওপর নির্ভর করছে সতীত্ব।

এই মানসিকতা পাল্টানো দরকার। জানি না কবে তা সম্ভব হবে। হয়তো আরও কয়েক প্রজন্ম কেটে যাবে। তবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। নইলে বিষয়টি থিতিয়ে যাবে।

শবরীমালা মন্দির খুললে নারী প্রবেশ নিষেধ

এদিকে সোমবারই দ্বিতীয়বারের জন্য খুলেছে শবরীমালা মন্দির।

তবে এখনও পর্যন্ত কোনো নারী সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। সেই নিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তাদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার, জাগোনিউজ২৪ : ৭ নভেম্বর ২০১৮

Share us
Next Post

পিহু : যে ছবি দুই বছরের শিশুকে সুপারস্টার বানিয়ে দিতে পারে

যে ছবিটি দুই বছরের শিশুকে সুপারস্টার বানিয়ে দিতে পারে পিহু : যে ছবি দুই বছরের শিশুকে সুপারস্টার বানিয়ে দিতে পারে! বেশ কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দু বছর বয়সী বাচ্চার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুক, টুইটারে দেখা যায় ভিডিওটি শেয়ার করছেন সবাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এটি বিনোদ কাপরি পরিচালিত […]
Pihu