২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

admin

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

আপনি যদি ঘোরতর বিজ্ঞানমনস্ক হোন, তাহলে এই সিনেমা আপনার জন্য নয়। আর যদি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারেন বিজ্ঞানকে, তাহলে এই ছবি থেকে আপনি পাবেন ষোলো আনা খাঁটি বিনোদন।

বিজ্ঞান প্রসঙ্গটা আগে বলে রাখি। এই ছবির বার্তা মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার ফলে ক্রমশই নাকি বাড়ছে ট্রান্সমিশন ফ্রিকোয়েন্সি।

মোবাইল টাওয়ার নিঃসৃত রেডিয়েশন নাকি মেরে ফেলছে পাখিদের।

এটা কতটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবনা তার প্রমাণ কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু, তাতে কী হয়েছে? রজনীকান্ত এবং অক্ষয়কুমার যখন বলছেন তখন বিনোদনের স্বার্থে, আসুন আমরা মেনে নিই এই বিজ্ঞান।

ছবির এক্কেবারে শুরুতে মোবাইল টাওয়ারে একজন বৃদ্ধ মানুষকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখা যায়। এই আত্মহত্যার মুহূর্তে কাছে-পিঠে থাকা হাজার হাজার পাখি উড়ে আসে সেই মৃত দেহের কাছে।

আর তার পরেই শহরের সমস্ত সেলুলার ফোন উড়ে যায় আকাশে।

সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মন্ত্রী-সান্ত্রী প্রত্যেকের মোবাইল ফোনই ভ্যানিশ। এই রকম সময় এক বৈঠকে প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক বশীকরণ (রজনী)-এর আশঙ্কা এটা কোনো সন্ত্রাসবাদীদের কাজ নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে অন্য এক শক্তি।

আর সেই শক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য ফিরিয়ে আনা দরকার রোবট চিট্টি (রজনী)-কে। নানারকম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বশীকরণ এবং তার রোবট সঙ্গীনি নীলা (অ্যামি) বুঝতে পারে এই সবকিছুই ঘটাচ্ছে পক্ষীরাজ (অক্ষয়)।

বাকিটুকু চিট্টি এবং পক্ষীরাজের মধ্যে আমরণ লড়াই।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

জানা থাকা দরকার, ২.০ ছবিটি কেবলমাত্র গল্প নির্ভর নয়। ছবিটির বেশির ভাগই দাঁড়িয়ে আছে দুর্দান্ত ভিজ্যুয়ালের উপর। উচ্চমানের কম্পিউটার গ্রাফিক্স এই ভিজ্যুয়ালের ভিত্তিভূমি।

ক্যামেরা, এডিটিং এবং ছবির সাউন্ড ডিজাইন যে কোনো আন্তর্জাতিক মানের ছবির সমতুল্য। আর এই সবকিছু দিয়েই তৈরি হয়েছে টান টান বিনোদন।

চিত্রনাট্যের একেবারে শুরুতেই কাহিনি কোন পথে এগোবে সেটা নির্দিষ্ট করা আছে এবং সেই পথ ধরেই খুব প্রেডিক্টেবলভাবে শেষ হয়েছে ছবির গল্প।

এই প্রেডিক্টেবিলিটি থাকা সত্ত্বেও যে দর্শক শেষ পর্যন্ত এই ছবির বিনোদনে আপ্লুত হয়ে থাকেন, তার কারণ ছবির কাহিনির ইউনিকনেস এবং কাহিনির সাবপ্লট।

এই সাবপ্লটের নায়ক হলেন পক্ষী বিশারদ এক বৈজ্ঞানিক। যে ভূমিকায় রয়েছেন অক্ষয়কুমার। পক্ষীরাজা এবং বৈজ্ঞানিক এই দুই অবতারেই অক্ষয়কুমার টেক্কা দিয়েছেন ডাবল রজনীকান্তকে।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

ছবিটির সাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দায়িত্বে আছেন দুই অস্কারবিজয়ী। যথাক্রমে রসুল পুকুট্টি এবং এ আর রহমান। এরা দু’জনেই এই ছবিটির অডিওকে উন্নত করেছেন আন্তর্জাতিক মানে।

আর, রজনীকান্তের অভিনয় নিয়ে বলার কিছু নেই। কারণ, তাকে অভিনয় করতে হয় না। তার উপস্থিতিই যথেষ্ট।

৬৮ বছর বয়সেও তিনি তার মেয়ের চেয়েও ছোট বয়সী মেয়েদের সঙ্গে ছবিতে যেভাবে ফ্লার্ট করেন, সেটা ছবির রোবট চিট্টির থেকেও বিস্ময়কর।
আর অক্ষয়কুমার যে বড় অভিনেতা, তা এই ছবিতে আরো একবার প্রমাণ করলেন।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরোর রিভিউ ২

২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার মুক্তি পায় বহুল আলোচিত বলিউড ছবি ‘২.০’। এটি এখন পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে বেশি বাজেটের ছবি।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেশি বাজেটের এ ছবিটির নির্মাণ খরচ বাংলাদেশি টাকায় ৬২৯ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি।

ছবিটির পেছনে দু’হাত ভরে টাকা খরচ করেছেন নির্মাতা এস শঙ্কর।

এ ছবিতে বিভিন্ন ধরনের ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের ব্যবহার দেখা রয়েছে। ১৫টিরও বেশি ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট প্রতিষ্ঠান এ ছবির সঙ্গে কাজ করেছে। শেষমেশ ৯০০-ও বেশি ইফেক্টর দেখা যাবে এ ছবিতে।

ছবিটি নির্মাণের আগে হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে এ ছবিতে অভিনয় করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

‘দ্য টারমিনেটর’খ্যাত এ অভিনেতা অভিনয় না-করার কারণে এর পর বলিউডের আমির খানকেও এ ছবিতে অভিনয় করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
শেষমেশ বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার এ ছবিতে অভিনয় করেন।

ছবিতে অক্ষয়ের মেকআপটাও ছিল একটু ভিন্নধর্মী। তার মেকআপরে জন্য কাজ করতেন তিন জন মেকআপ আর্টিস্ট। তার মেকআপের পেছনে তিন থেকে ছয় ঘণ্টা সময় ব্যয় হতো।

ছবিটির প্রসঙ্গে অক্ষয় তার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘২.০’-র শুটিং শেষে ২ ডি ফরমেট থেকে ৩ ডি করা হয়নি। কারণ ছবিটির শুটিং-ই হয়েছে ৩ ডি ফরমেটে। যে কারণে এ ছবির শুটিং-এর অভিজ্ঞতাও আমার কাছে অন্যরকম ছিল।

আমার মনে হয় পর্দায় দর্শকের কাছেও তা অন্যরকম মনে হতে পারে।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো

‘২.০’ ছবিতে অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত, অ্যামি জ্যাকস, অক্ষয় কুমার, শুধাংশু পান্ডে ও আদিল হুসেনসহ অনেকে। ছবিটির সংগীত পরিচালনা করেছেন এ আর রহমান। ২০১০ সালের তামিল ‘এনথিরন’ ছবির সিক্যুয়েল এটি।

ছবির গল্পে ভিলেন ডাক্তার রিচার্ডের চরিত্রে দেখা যাবে অক্ষয়কে। আর তার সুপার পাওয়ারের পাশে বিজ্ঞান প্রযুক্তি টিকতে পারছে না। এই সুপার পাওয়ারের উৎস হলো মোবাইল ফোন, যাকে হাতিয়ার করে পৃথিবীর বুকে ঘোর অন্ধকার নিয়ে ধেয়ে আসছে সে।

বিজ্ঞানও যেখানে ব্যর্থ হলো সেখানে আশার আলো রজনীকান্ত অর্থাৎ ডাক্তার ভাসিকরণের রোবট চিট্টি। অবশেষে চিট্টিই এলো উদ্ধারে। কীভাবে সে এমন ভিলেনের হাত থেকে বাঁচাবে পৃথিবীর মানুষদের?

কারণ এ ভিলেন কখনো মানুষরূপী তো কখনো বাজপাখি তো আবার কখনো ফোন দিয়ে তৈরি সেনাবাহিনী।

২.০ : টু পয়েন্ট জিরো-র রিভিউ ৩

পরিচালক শংকরের ‘রোবোট’ ছবি যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শুরু হয় ‘২.০’। বিজ্ঞানী ভাসিগরন, ‘এভিল চিট্টি’ ও ‘গুড চিট্টি’ এবং পক্ষীরাজা হিসাবে অক্ষয়কুমারের শক্তির লড়াই এই ছবির চিত্রনাট্য।

একদিনে সারা বিশ্বের ১০,০০০ হলে মুক্তি পায় ছবিটি।

-রঙিনদুনিয়া ডেস্ক
Share us
Next Post

‘মি টু’ নিয়ে মাধুরী দীক্ষিত

‘মি টু’ নিয়ে মাধুরী দীক্ষিত ‘মি টু’ নিয়ে কথা বলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। সম্প্রতি পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ‘মিটু’ আন্দোলন। বলিউডে রীতিমত ঝড় তুলেছে। বেরিয়ে এসেছে অনেক নিভৃতচারী গুণী মানুষের মুখোশও। অভিনেত্রী ও নারী নির্মাতা-কলাকুশলীদের যৌন হেনস্তার দায়ে অভিযোগের কাঠগড়ায় উঠেছে নানা পাটেকারসহ অনেক নামী-দামি তারকার নাম। একে একে প্রায় জনপ্রিয় তারকারা […]
Madhuri Dixit