হারকিউলিস মাছরাঙার টিভি পর্দায়
টিভি পর্দায় ফের প্রচারিত হতে যাচ্ছে জনপ্রিয় বিদেশী সিরিয়াল ‘হারকিউলিস’।
জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘হারকিউলিস’-এর স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কথা নয় দর্শকদের।
দীর্ঘদিন বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বাংলায় ডাবিং করা এই মার্কিন সিরিজে বুঁদ হয়েছিলেন বহু মানুষ।
বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে দারুণ আকৃষ্ট করেছিলো ‘হারকিউলিস’।
এ প্রজন্মের অনেক দর্শকেরই দেখার সুযোগ হয়নি অ্যাডভেঞ্চারভিত্তিক চমৎকার এই সিরিজটি।
নতুন প্রজন্মের দর্শকদের দেখার সুযোগ করে দিতে এবং পুরনো দর্শকদের স্মৃতিকে আবার নতুন করে জাগাতে মাছরাঙা টেলিভিশন প্রচার করতে যাচ্ছে ‘হারকিউলিস’।
মাছরাঙা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সিরিজটির প্রচার শুরু হচ্ছে তাদের চ্যানেলে। প্রতি সপ্তাহে রবি থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় প্রচারিত হবে এই সিরিজটি।
তথ্যসূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
হারকিউলিস মাছরাঙার টিভি পর্দায়
উইকিপিডিয়ায় হারকিউলিস
হারকিউলিস হল একজন পৌরাণিক রোমান বীর ও দেবতা। গ্রিক অর্ধ-দেবতা ও বীর হেরাক্লিসের রোমান সংস্করণ হারকিউলিস।
ধ্রুপদী পুরাণবিদ্যায়, হারকিউলিস তার শারীরিক শক্তি ও দুর্গম অভিযাত্রার জন্য বিখ্যাত ছিল।
হারকিউলিস একটি বৈপরীত্যময় বহুরৈখিক চরিত্র, যার ফলে কবি সাহিত্যিকরা তাকে ইচ্ছেমতো চিত্রায়িত করতে পারে।
জন্ম ও যৌবন
তার জন্ম থিবিস। তিনি দেবরাজ জিউসের পুত্র। তার মা আক্লমিনা একজন মানুষ।
জিউসের সন্তান হবার জন্য হারকিউলিসের জীবনের শেষ পর্যন্ত হেরা তাকে কখনই ক্ষমা করেননি।
হারকিউলিস যখন শিশু তখনই হেরা তাকে হত্যা করার জন্য দুটি সাপ পাঠান।
ঘুমন্ত শিশু হারকিউলিস ঘুম থেকে জেগে উঠলো এবং শিশু হওয়া সত্তেও ঐ ভয়ঙ্কর প্রাণীর দুটির গলা ধরে মেরে ফেললো।
হারকিউলিস সম্পর্কে তখন থিবিসের অন্ধ ভবিষ্যদ্বক্তা টাইরেসিয়াস আক্লমিনাকে বলেছিলেন যে সে হবে মানবজাতির গর্ব।
হারকিউলিস আঠার বছর বয়সের মধ্যেই একাই মেরে ফেলে এক বিশাল থেসপিয় সিংহ।
মিনিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অসামান্য অবদানে জন্য নগরবাসীরা রাজকুমারী মেগারাকে তার সাথে বিয়ে দেয়।
হারকিউলিসের শ্রম
হারকিউলিস তার স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি খুবই অনুরক্ত ছিলেন। কিন্তু তার সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।
হেরা একদিন তাকে উন্মাদ করে দেন। এই অপ্রকিতস্থ অবস্থায় তিনি তার স্ত্রী-পুত্রদের হত্যা করেন।
পরে চেতনা ফিরে আসলে তিনি যখন জানতে পারেন যে তিনিই তার স্ত্রী-পুত্রদের হত্যা করেছেন, তখন তিনি লজ্জা, রাগ ও কষ্টে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু ইউরেস্হিউস এর উপদেশক্রমে তিনি বার রকম অসম্ভব কাজ করার সিধান্ত নেন নিজেকে বিশুদ্ধ করার জন্য। এই কাজ গুলোকে সমষ্টিগতভাবে হারকিউলিসের শ্রম বলে।
এগুলো ছিল নিমিয়ার এক সিংহকে বধ করা, বাস্রতের হাইড্রাকে হত্যা করা,রাজা অজিয়াসের আস্তাবল পরিষ্কার করা, স্টিমফ্যালিন পাখিদের তাড়ানো ও অন্যান্য ভয়ঙ্কর সব কাজ।
এগুলো তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেন এবং স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত করেন।
অন্যান্য অভিযান
হারকিউলিসের বিভিন্ন অভিযান নিয়ে রয়েছে গল্পের পর গল্প। তিনি নানা স্থানে গিয়েছিলেন আর স্থাপন করেছিলেন আরো অনেক কীর্তি।
ভয়ংকর দানব অ্যান্টিউসের বিরুদ্ধে, নদী-দেবতা অ্যাকিলাসের বিরুদ্ধে, লড়াই করার পাশাপাশি ট্রয়ের যুদ্ধে এক কুমারীকে উদ্ধার করাও তিনি মহিমান্বিত হন। অ্যাডমিটাসের মৃত স্ত্রী অ্যালসেস্টিসকে মৃত্যু-দেবতার হাত থেকে লড়াই করে ফিরিয়ে আনেন হারকিউলিস।
বিতর্কমূলক কাজ
অস্বাভাবিক শক্তি থাকার জন্যে সামান্য অসাবধানতার জন্যই হারকিউলিসের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার একাধিক ঘটনা রয়েছে।
তা ছাড়া বাল্যকালে রাগের মাথায় শিক্ষকের মাথায় বীণা দিয়ে প্রচন্ড আঘাত করে হত্যা করেন হারকিউলিস।
মৃত্যু
হারকিউলিস পরবরতীতে ডিয়ানাইরাকে বিয়ে করে । এক সেন্টর নেসাস ডিয়ানাইরাকে লাঞ্ছিত করতে চাইলে হারকিউলিস তাকে বিষাক্ত তীর দিয়ে আঘাত করে।
মারা যাওয়ার আগে সেন্টর ডিয়ানাইরাকে তার নিজের কিছু রক্ত দিয়ে বলে যে এই রক্তের ব্যবহারে জাদুবলে হারকিউলিস তাকে ছাড়া অন্য কোন নারীকে ভালবাসবেনা। কিন্তু এটা ছিল নেসাসের এর চালাকি।
ডিয়ানাইরা ঐ রক্ত হারকিউলিসের পরিধেয় গাউনে মাখিয়ে দেয়। জামাটি পরিধান করার সাথে সাথে হারকিউলিসকে ভয়ংকর ব্যথা গ্রাস করলো। দেবতার কাছাকাছি হওয়ায় মৃত্যু তাকে গ্রাস করবে না তিনি তা ভাল করেই জানতেন।
তাই তিনি একটি চিতা তৈরি করলেন ও তার উপর বসলেন। চিতায় আগুন জ্বলে উঠলে তাকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে বিয়ে দাওয়া হয় হেরার কন্যা-জৌবনের দেবী ‘হিবির’ সাথে।
পশ্চিমা সাংস্কৃতিক জগতে হারকিউলিস
হারকিউলিসকে প্রধান চরিত্র রেখে একাধিক চলচিত্র, টেলিভিশন সিরিজ হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ডিসনি ১৯৯৭ সালে ‘হারকিউলিস’ নামে এনিমেটেড ছবি তৈরি করে।
১৯৯৫ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত একই শিরোনামে একটি টেলিভিশন সিরিজ একাধিকবার জনপ্রিয়তা অর্জন করে।