
চিত্রনায়িকা, নৃত্যশিল্পী জবা চৌধুরীর প্রয়াণ হয়েছে। একটি ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ‘জিঘাংসা’। ছবিটি সুপারহিটও হয়। ছবির গানও ছিল মানুষের মুখে মুখে।
‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন’ খুরশিদ আলম ও রুনা লায়লার গাওয়া জনপ্রিয় এই গানে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন ওয়াসিম ও জবা চৌধুরী।
প্রথম ছবিতে আলোচিত সেই নায়িকার এর পর আর কোনো খোঁজ ছিল না। একেবারেই অন্তরালে চলে যান। ৪৫ বছর পর নায়িকার খোঁজ মিলল মৃত্যুর সংবাদে।
৩ মে ২০২০, রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় দিনাজপুরের রানীর বন্দর এলাকার নিজ বাড়িতে স্ট্রোক করে মারা যান জবা চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা ধরনের রোগে ভুগছিলেন।
১৯৪৭ সালে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি (রানীর বন্দর এলাকার) গছাহার গ্রামে জবা চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের দেওয়া নাম : জোবায়দা খাতুন। সিনেমায় নাম বদলে হন জবা চৌধুরী। তাঁর বাবা আফান উদ্দিন ছিলেন নাট্যশিল্পী।
জবা চৌধুরী যাত্রাপালায়ও অভিনয় করতেন। ছিলেন নৃত্যশিল্পী। ১৯৬৭ সালে খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় বেশ কয়েকটি মঞ্চনাটকেও নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন। উল্লেখ্য, ‘উদয় নালা’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’, ‘টিপু সুলতান’, ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘ঈসা খাঁ’।
স্বাধীনতার পর চলচ্চিত্র প্রযোজক আবু তাহের চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে। তাঁরই প্রস্তাবে এবং প্রযোজনায় এবং ইবনে মিজান পরিচালিত ‘জিঘাংসা’ চলচ্চিত্রে ১৯৭৩ সালে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন।
১৯৭৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পায়। ছবিটি সুপারহিট হয়, প্রথম ছবিতেই জবা চৌধুরীও আলোচনায় আসেন।
‘জিঘাংসা’ ছবিতে আরো অভিনয় করেন—ফতেহ লোহানী, শওকত আকবর, আনোয়ার হোসেন, সুচরিতা, জসীমসহ অনেক গুণীশিল্পী।
পরে এই সিনেমার প্রযোজককে বিয়ে করে সংসারী হন জবা। ‘জিঘাংসা’ ছবিতে প্রধান নায়িকা ছাড়াও ‘কত যে মিনতি’, ‘সতী নারী’, ‘বিচার’, ‘ডাকু মনসুর’সহ বেশ কয়েকটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন।
জবা-তাহের দম্পতির কোনো ছেলেমেয়ে না-থাকায়, ২০০১ সালে স্বামীর মৃত্যর পর জবা চৌধুরী ঢাকা ছেড়ে একেবারে বাবার বাড়ি গছাহার গ্রামে চলে যান।
সেখানেই বসবাস শুরু করেন, আর ঢাকায় ফেরেননি। জানা গেছে, জীবনের শেষ সময়টায় ভীষণ অর্থকষ্টেও ভুগেছিলেন তিনি।
—ডেস্ক রঙিনদুনিয়া