
আজ বাংলা লোকগানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এবং জাতীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন মমতাজ বেগম। ১৯৭৪ সালের ৫ মে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলায় বাংলাদেশের এই সুর সম্রাজ্ঞী জন্মগ্রহণ করেন।
মমতাজ তার চার দশকের ক্যারিয়ারে সাতশ’র অধিক গান রেকর্ড করেছেন। প্রথম জীবনে বাবা মধু বয়াতি, পরে মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান এবং শেষে আব্দুর রশীদ সরকারের কাছে তিনি গান শেখেন।
মমতাজ সারাদেশে বিভিন্ন সংগীতানুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ ও গান করেন। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই সংগীত অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন এবং তার গান ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
বাংলা সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিশেষ করে বাংলা নববর্ষের বৈশাখী মেলায় তার দু-একটি গান বেশ জনপ্রিয়।
২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য মনোনীত হোন মমতাজ বেগম। পরে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সরাসরি নির্বাচিত হন, কোটায় নয়।
কিছুদিন আগে ‘প্রিয় দেশবাসী/ আমি আপনাদের সবার প্রিয় শিল্পী মমতাজ বলছি/ দেশে ফেরত বন্ধু যখন/ চোদ্দ দিন বাইরে না গিয়া/ সবার ভালর কথা ভাইবা একলা রয়/ ঘরে একলা রয়/ মনটা ভইরা যায়/ ও মনটা ভইরা যায়।’—এমন কথায় নতুন একটি গান প্রকাশ করেছেন তিনি।
ব্র্যাকের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তার এ গান। মমতাজের বহুল প্রচারিত ও অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘বুকটা ফাইট্যা যায়’ শীর্ষক গানটির সুরের উপর নতুন এ গানটি বসানো (ধারণ করা) হয়।
কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা : পঞ্চম শ্রেণি পাশ, পরে দশম শ্রেণি। জন্ম দরিদ্র বাউল পরিবারে। পিতা মধু বয়াতি, মাতা উজালা বেগম।
প্রথম স্বামী আব্দুর রশিদ সরকার (মৃত), তিনিও লোকগানের শিল্পী ছিলেন। দ্বিতীয় স্বামী রমজান আলী, মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেশ কয়েকবারের নির্বাচিত মেয়র। তাকে তালাক দিয়ে পরে তিনি তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের চিকিৎসক এ এস এম মঈন হাসানকে বিয়ে করেন।
মমতাজ বেগমের ছেলের নাম মেহেদী খান ও পুত্রবধূর নাম চৈতি দেওয়ান। তার এক নাতনি।
প্রথম জীবনে তিনি পালাগান শিল্পী ছিলেন। বেশ পরে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। পালাগানে শুরু হলেও প্রতিষ্ঠা পান বিচ্ছেদ আর মুশির্দী গানে।
গিনেস বিশ্ব রেকর্ড
গান করে তার নাম উঠে গেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকেও। তাঁর জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র নিমার্ণ নির্মিত হয়েছে। দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে পড়েছে সুনাম।
রাজনীতি ও সামাজিক কমর্কাণ্ড
আবার সংগীত জীবনের পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েছেন রাজনীতি ও সামাজিক কমর্কাণ্ডেও। বর্তমানে দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য। সামাজিক কাজের মধ্যে উল্লেখ্য, মমতাজ চক্ষু হাসপাতাল, মানিকগঞ্জ সদর।
পুরস্কার
মমতাজ বেগম তাঁর সংগীতজীবনে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ ও ২০১৭ সালে শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত হোন।
—ডেস্ক রঙিনদুনিয়া